চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এ কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে।
উপজেলা সদর বাজারে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
স্থানীয়রা জানান, সংসদ সদস্য মুজিবুল হক ও তার বিরেধী পক্ষ চৌদ্দগ্রামের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন। মিজানুরের পক্ষ মঙ্গলবার একটি শো-ডাউনের আয়োজন করে উপজেলায়।
সকালে শো-ডাউন ঠেকাতে মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেন মুজিবুল হকের অনুসারীরা। এক পর্যায়ে সদরে মিজানুরের সমর্থকরা শো-ডাউন শুরু করলে ধাওয়া দেন মুজিবুল হকের সমর্থকরা। এ সময় সংঘর্ষ বেধে যায়।
জানা যায়, বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য এবং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের অনুসারী ও সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা তমিজউদ্দিন সেলিম অংশের নেতা–কর্মীরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করে। মঙ্গলবার সকালে কর্মসূচির শুরুতেই দোয়েল চত্বর সংলগ্ন এলাকায় উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িতে পড়ে।
এসময় মহাসড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ও দশীয় অস্ত্র দিয়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা তাণ্ডব চালায়। সড়কে অবস্থানরত কয়েকটি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে বর্তমান এমপি মুজিবুল হক গ্রুপের বাতিসা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী ফখরুল আলম ফরহাদ, পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির পাটোয়ারী ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান গ্রুপের পৌর আ’লীগ নেতা মনসুর আলম আজাদ, পৌর যুবলীগ নেতা ফরাস উদ্দীন রিপন এবং আরিফুর রহমান মামুন এর পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকী আহতদের এখনো পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ঘটনার শুরু থেকেই চৌদ্দগ্রাম বাজার সহ ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চৌদ্দগ্রাম সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম ও চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমার নেতৃত্বে কমপক্ষে ২০০ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য এবং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিতে এমপি সাহেবের লোকজন হামলা করে। এতে উভয়পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়।’
এ বিষয়ে তাৎক্ষনিকভাবে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের ওবক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বরাতে জানা যায়, বিদ্রোহীদের শো-ডাউনে যেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা-কর্মীরা আসতে না পারেন সেজন্য মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এতে প্রাইভেটকার, মাইক্রো বাস, ট্রাক, পিকআপ ও অ্যাম্বুল্যান্সে তল্লাশি করা হচ্ছে।
মিয়া বাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ লোকমান হোসেন বলেন, ‘আমরা সড়কে আছি। ঘটনাস্থলের দুই পাশে ২০ কিলোমিটার করে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।’
কুমিল্লা জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (চৌদ্দগ্রাম সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মিছিলে নামে এমপি মুজিবুল হকের সমর্থকেরা। এসময় আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত নেতারা চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের সমর্থনে মহাসড়কে নেমে ভাঙচুর চালায়। পরে এমপি মুজিবুল হকের সমর্থকেরা তাদের প্রতিহত করতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উভয় পক্ষ মহাসড়ক ছেড়ে চলে গেছে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page