কুমিল্লায় বাড়ছে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। করোনা নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে এই কুমিল্লা মৃত্যুপুরী হবে। তাই রাগ অভিমান ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। পাশাপাশি করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমনই মানবতার আহবান জানিয়েছে মোঃ রেজাউল করিম রুবেল৷ তার এই পোস্টটিকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছেন নেটাগরিকরা।
রেজাউল করিম রুবেলের ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
“” ৫নং পাঁচথুবী ইউনিয়ন একটি শহর কেন্দ্রীক বা শহরমূখী ইউনিয়ন। এই ইউনিয়ন টি দুটি ভাগে বিভক্ত, যার এক অংশ গোমতীর দক্ষিনে এবং অপর অংশ গোমতীর উওরে যেখানে বিশাল একটি অংশ রয়েছে প্রবাসে।আমাদের কুমিল্লা ৬ নির্বাচনি আসনে ৫ নং পাঁচথুবী ইউনিয়ন এর নাম সর্ব প্রথম আসে। কারন,এই ইউনিয়নে রয়েছে বেশ কয়েকজন শিল্পপতী ও কুমিল্লা সিটি করর্পোরেশনের উচ্চবিত্ত অবস্থানে কর্মরত লোক । যারা ইচ্ছে করলে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, পাঁচথুবী ইউনিয়নের সকল ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে। কিন্তু তাদের মধ্যে ঐক্যর অভাব, তাই যে রকম উন্নয়ন হবার কথা, ঐ রকম উন্নয়ন এখনো হয় নাই ।
তারপরও তাহারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, যে কোন উন্নয়নমূলক কাজে এবং মানুষের বিপদে-আপদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকে । আজ আমি হাজির হয়েছি, এই পাঁচথুবী ইউনিয়নের সকল বিত্তবানদের কাছে। যারা আমাদের এই ভয়াভহ পরিস্থিতিতে, আপনাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন। একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার এই মূহুর্তে করোনা রোগীর জন্য কত যে প্রয়োজনীয় তা একমাত্র যাদের হয়েছে সে এবং তার পরিবারই জানে। তাই আপনাদের কাছে আকুল আবেদন, সকলে সম্মিলিতভাবে অথবা একক ভাবে কিছু অক্সিজেন সিলিন্ডার, এ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা এবং করোনা রোগীদের অসহায় পরিবারকে আর্থিক এবং মানবিক ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
আমাদের পাড়া মহল্লায় ও যাদের সামর্থ্য আছে তারা ও সকলে সম্মিলিত ভাবে করোনা মোকাবিলায়, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করুন। এখন আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত শিবির করার সময় নয়। এখন এক ভাই আরেক ভাইয়ের বিপদে, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার সময়।যদি মহান আল্লাহ আপনাকে বাঁচিয়ে রাখে তখন আবার দলাদলি, লাফালাফি, টাকার অহংকার সবকিছু দেখাতে পারবেন। আর বেঁচে না থাকলে সবকিছুই শেষ। হয়তোবা কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে আপনার নামের পাশে “মরহুম” শব্দটা যোগ হতে পারে। আমাদের অনেক প্রবাসী বা রেমিট্যান্স যোদ্ধা আছে যারা আমাদের এই এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে অনেক অবদান রেখেছেন এবং বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতেও রাখবেন।
আজ তাদের মধ্যে অনেকেই প্রবাসে লকডাউনে আছে, আবার অনেকেই দেশে অবস্থান করছেন, আবার আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রবাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন ও করেছে, তাই এই সকল পরিবারের যারাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অথবা হবে, তাদের প্রতি আমাদের সকলেরই উচিত, সকল ধরনের ভেদাভেদ ভুলে আমাদের সবাই সবার অবস্থান থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। ইতিমধ্যে আমাদের এলাকার এবং ইউনিয়নের অনেকেই আমাদের মাঝে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিদায় নিয়েছেন। তাই শুধু সরকারের আশায় বসে না থেকে, আমরা নিজেরা নিজেদের মত করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই। ১৯৭১ সালে যেই ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার যোদ্ধে জয় হয়েছিলাম এখন আমাদের আবার সকল ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে একটু অন্যভাবে, ঐক্যবদ্ধ হবার সময় এসেছে। এখন আমাদের উচিৎ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একজন অন্যজনের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। এখনও সময় আছে সময় থাকত,আমি, আমরা এবং আপনারা আবারও আমাদের ইউনিয়নের সকল বিত্তবানদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
ইনশাআল্লাহ একদিন এইদেশে করোনা নামক গজবটা মহান আল্লাহ এই পৃথিবী থেকে তুলে নিবে,কিন্তু আপনাদের অবদান এই ইউনিয়ন এর মানুষ কোনদিন ও ভুলবে না। মহান আল্লাহ আপনাদের সকলকে, সুস্থ শরীরে আমাদের ইউনিয়নে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার তৌফিক দান করুক।
আমিন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page