স্টাফ রিপোর্টার।।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) এর ‘থ্রিডি-টুডি’ দুর্নীতি বিষয়ে এবং বাপেক্সের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থে রীট করেছেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভােকেট মােঃ ইয়াকুব আলী।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভুইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গনমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
রীটে তিনি গত ২৭/০৭/২০২২ইং তারিখ দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক যুগান্তর ১৯/০৭/২০২২ইং তারিখ, দৈনিক ইন্ডাষ্ট্রি ১৭/০৫/২০২২ইং তারিখ এবং দৈনিক অবজারভার ০৫/০৭/২০২২ইং তারিখে প্রকাশিত বাপেক্সের বিভিন্ন দুর্নীতি সম্পর্কে প্রতিবেদন সংযুক্ত করেন।
রীটকারীর পক্ষে আইনজীবী এডভােকেট একলাছ উদ্দিন ভূইয়া বলেন “বাপেক্সের বিভিন্ন দুর্নীতি সম্পর্কে অত্র রীটকারী পক্ষে জনস্বার্থে মহামান্য হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি জনাব মজিবর রহমান মিয়া এবং মাননীয় বিচারপতি জনাব কাজী মােঃ ইজারুল হক আকন্দের আদালতে শুনানী হবে মর্মে জানান।
অত্র মামলার বিবাদীরা হলেন সচিব, ক্যাবিনেট ডিভিশন; সিনিয়র সচিব, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়; চেয়ারম্যান, বি.আই.আর.সি; ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাপেক্স ও ডি.জি.এম, বাপেক্স।
উল্লেখ্য; দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা লোপাটের প্রমাণ পেয়েও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেড’ (বাপেক্স)। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিষ্ঠানটির কয়েক কর্মকর্তার যোগসাজসে গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্সের থ্রিডি ও টুডি সাইসমিক প্রকল্পে ৬১০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। সেই সঙ্গে ভূয়া কাগজপত্রে ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা।
এসব বিষয়ে গত ১০ মে পর্যন্ত বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দপ্তর ছাড়াও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা), এমনকি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যানের দপ্তরেও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে দফায় দফায়। তদন্তে কোটি কোটি টাকা অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে পেট্র্রোবাংলা গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। বাপেক্সের অভিযুক্ত উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও থ্রিডি সাইসমিক প্রকল্পের পরিচালক মেহেরুল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করেছে কমিটি। প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকা দুর্নীতির সত্যতা পেয়ে তথ্যপ্রমাণসহ তা তদন্ত প্রতিবেদনসংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়েছে বাপেক্স গঠিত তদন্ত কমিটিও; কিন্তু এই দুর্নীতির নেটওয়ার্ক এতটাই মজবুত যে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তবে বাপেক্সের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে দুদক।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে সংস্থাটি। গত ৩১ মার্চ বাপেক্সের থ্রিডি ও টুডি সাইসমিক প্রকল্প ও রূপকল্প-প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আট উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এবং বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) পদমর্যাদার ১০ কর্মকর্তাকে তলব করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালাম। এদের মধ্যে কয়েক কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ দুদক কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। কারও কারও বিদেশে যাওয়াসহ কর্মস্থল ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর ওপর কোনো অডিট বা অভ্যন্তরীণ তদন্ত হয়ে থাকলে তা দুদকের কাছে হস্তান্তরের জন্য বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলোর ভৌত এবং আর্থিক অগ্রগতিসংক্রান্ত তথ্যাদি চাওয়া হয়েছে। গত ১০ এপ্রিল এসব নথিপত্র দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেয়নি বাপেক্স। এসব প্রকল্পে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘আর্নিব এন্টারপ্রাইজেরও’ যাবতীয় ফাইল তলব করা হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page