ফয়সাল মিয়া, কুবি।।
জারুলের বেগুনি আভায় সেজেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় । মুক্তমঞ্চ থেকে শুরু হয়ে বৈশাখী চত্ত্বর, পি এ চত্ত্বর, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া এবং কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন গাছগুলোতে ফুটেছে মায়াভরা এই জারুল ফুল। গ্রীষ্মের তপ্ততায় যখন সবাই ক্লান্ত, ঠিক তখনি জারুলের স্নিগ্ধতা আচ্ছন্ন করে সবাইকে।
বসন্তের পাতাহীন নগ্ন জারুল গাছ গ্রীষ্মের শুরুতে নব যৌবন ফিরে পায়। এই ফুলের ইংরেজি নাম Giant crape-myrtle এবং বৈজ্ঞানিক নাম Lagerstroemia Speciosa। জারুল ফুলগুলো থাকে শাখার ডগায়, পাতার ওপরের স্তরে। ছয়টি মুক্ত পাপড়ি বিশিষ্ট জারুল সবুজ ও বাকল হালকা বাদামি বর্ণের। ফুলগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার রয়েছে বিশেষ ঔষধি গুণ। উদ্ভিদবিজ্ঞানী ও আধুনিক চিকিৎসকদের মতে,” জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতার প্রতিশেধক হিসেবে কাজ করে এই ছোট জারুল। এ গাছের ছাল ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।”
জারুল গাছের বিভিন্ন অংশের রয়েছে আলাদা ভেষজ গুণ। কাশি হলে এই গাছের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি মধুর সাথে মিশিয়ে কয়েকদিন খেলে কাশি ভালো হয়। অনিদ্রা রোগে জারুল গাছের মূল চূর্ণ করে গরম পানির সাথে রাতের বেলা নিয়মিত খেলে অনিদ্রা কেটে যায় এবং ভালো ঘুম হয়।জারুল গাছের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি সকাল ও বিকেলে সেবন করলে জ্বর ভালো হয়ে যায়। বাত রোগের ব্যাথা দূর করতে জারুল গাছের পাতা বেটে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।
জারুল কাঠ লালচে রঙের, অত্যন্ত শক্ত ও মূল্যবান। ঘরের কড়ি-বরগা, লাঙল, আসবাবপত্র ইত্যাদি বহুবিধ কাজে জারুল কাঠ সুব্যবহৃত।জারুলের Lagerstroemia indica নামে ছোট একটি প্রজাতি রয়েছে, যা বৃহত্তর সিলেট ও কিশোরগঞ্জে প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়।
এক দিকে সৌন্দর্য আরেক দিকে ঔষধি গুণ সম্পন্ন এ গাছ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায় যেমন: ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও মালয়েশিয়া এবং মাটির আনুকূল্যে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানত চট্টগ্রাম পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলের নিম্ন এলাকায় এবং সোনারগাঁওয়ের গ্রামাঞ্চলে ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহা-সড়কে ধারে জারুল গাছ ব্যাপক পাওয়া যায়।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page