কুমিল্লায় ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

দেবিদ্বার প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মানসিক অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে ক্ষোভে এক রিকশাচালক আাত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার (২১ মে) ভোর ৫টার দিকে বসতবাড়ির পাশের একটি গাছ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের নাম মো. আবুল হাশেম। তিনি গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে।

নিহতের স্ত্রী মোসা. ছালমা বেগম বলেন, এনজিও প্রতিষ্ঠান উদ্দীপন থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার পর দুই কিস্তি পরিশোধ করি। পরে আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় আর কাজে যেতে পারেনি। এতে দুটি কিস্তি বাকি পড়ে যায়।

সোমবার (২০ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উদ্দীপনের ১০-১২ জন লোক বাড়িতে এসে আমার স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন। তারা আমার স্বামীকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি তাদের হাতে-পায়ে ধরে কিছুদিন সময় চাই। তারা এক ঘণ্টাও সময় দিতে রাজি হয়নি। ঘরে বসে কিস্তির ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে চাপ দিতে থাকে। আমরা কোনো উপায় না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও টাকার ব্যবস্থা করতে পারিনি। পরে সবাই মিলে সন্তানদের সামনেই আমার স্বামীকে বিভিন্ন ভাষায় গালাগাল ও অপমান করতে থাকে।

একপর্যায়ে একজন বলেন, ‘ঋণের টাকা দিতে পারিস না, গলায় দড়ি দিয়া মর। মরলেই তো তোর টাকা মাফ। উল্টো তুই আরও ৫০ হাজার টাকা পাবি। এরপর তারা সকালের মধ্যে টাকার ব্যবস্থা করার কথা বলে চলে যায়। পরে ভোরে বাড়ির পাশে একটি গাছে ঝুলে আমার স্বামী আত্মহত্যা করে। আমি এনজিও কর্মীদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’

এ বিষয়ে দেবিদ্বার পৌরসভার ফুলগাছতলা এলাকায় এনজিও প্রতিষ্ঠান উদ্দীপন অফিস গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যান শাখা ব্যবস্থাপক আবু হেনা।

তবে শাখার কম্পিউটার অপারেটর মো. হাবিব বলেন, আমি মাঠপর্যায়ে কালেকশান করি না। আপনারা এসেছেন এজন্য শাখা ব্যবস্থাপককে কয়েকবার কল দিয়েছি কিন্তু তিনি কোনো সাড়া দিচ্ছেন না।

দেবিদ্বার থানার ওসি মো. নয়ন মিয়া বলেন, এনজিওর ঋণের চাপে একজন রিকশাচালক আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  

You cannot copy content of this page