কুমিল্লার মুরাদনগরে ৮১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক; শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

মনির হোসাইন।।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের দিয়ে চলছে ৮১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে শূন্য। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মোট ১৩৩টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পদগুলো শূন্য থাকায় এসব বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২২ ইউনিয়নে ২০৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৭টিতে প্রধান শিক্ষক কর্মরত আছেন। আর চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ৪৬ জন। ৮১ টি প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে শূন্য। তাছাড়া ২০৪টি বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষকের পদ রয়েছে ১২৪১টি। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১১০৮জন। বাকী ১৩৩টি সহকারি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। উপজেলার এতগুলো বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে একজন সহকারি শিক্ষককে ওই পদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হয়। ওই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দাপ্তরিক বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততার কারণে তাদের নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এতে বাকি শিক্ষকদের ওপর পাঠদানের বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। আবার প্রধান শিক্ষক না থাকলে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রমও ব্যাহত হয়। ফলে দীর্ঘ সময় উপজেলার অনেক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

উপজেলার চুলুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: কামরুল ইসলাম শাহিন বলেন, আমি গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় শ্রেনি পাঠদানের পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের সব কাজ আমাকে করতে হয়। বিদ্যালয়টিতে এখন আমি সহ মাত্র তিনজন শিক্ষক কর্মরত। ফলে কোনো শিক্ষক ছুটিতে থাকলে এবং আমাকে অফিসের কাজে কোথাও যেতে হলে বা ব্যস্ত থাকলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হয়। তাই শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক দ্রুত নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষক বলেন, বদলি ও অবসরজনিত কারণে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হওয়ায় সহকারি শিক্ষকদের মধ্যে একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। একজন সহকারী শিক্ষক যখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকেন তখন অনেক সহকারী শিক্ষক মনস্তাত্ত্বিকভাবে তাকে মেনে নেন না। ফলে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়।

অবিভাবকেরা জানান, সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে স্কুলগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকার বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবসর ও বদলিজনিত কারণে যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, সেই পদগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সামনে নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলেই উপজেলার যেসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নেই, তা পূরণ হবে। আশা করছি এরপর শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আর কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮

You cannot copy content of this page