স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পূর্তীতে ‘মুক্তিযুদ্ধে ফতেহাবাদের ভূমিকা শীর্ষক’ আলোচনা সভা

এ,আর,আহমেদ হোসাইন, দেবিদ্বার প্রতিনিধি।।
‘স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির প্রতিযোগীতা থামেনি। আগামী প্রজন্মও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার সুযোগ থেকে বঞ্চতি রয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় দল নিরপেক্ষ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ও ইতিহাস বিদদের এগিয়ে আসতে হবে।’

শনিবার সকাল ১১ টায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার পূর্ব ফতেহাবাদ গ্রামের ‘নলআরা’য় (এক সময়ের গভীর জঙ্গল) প্রতিষ্ঠা মুক্তিযুদ্ধের অস্থায়ী প্রশিক্ষন ক্যাম্প স্থলে আয়োজিত ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে ফতেহাবাদের ভূমিকা শীর্ষক’ আলোচনা সভায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ¦ হুমায়ুন কবির ওইন বক্তব্য তুলে ধরেন।

দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে, প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ খলিলুর রহমান বাবুল’র সভাপতিত্বে আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধে ফতেহাবাদের ভূমিকা শীর্ষক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও আ’লীগ কুমিল্লা (উঃ) জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ¦ হুমায়ুন কবির, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক গঠিত বিশেষ গেরিলা বাহিনী ‘এলাহাবাদ মুক্তিযুদ্ধ প্রশিক্ষণ ক্যাম্প প্রধান বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা মুস্তাকুর রহমান ফুল মিয়া মাষ্টার, ন্যাপ দেবীদ্বার উপজেলা সভাপতি অনিল চক্রবর্তী, প্রধান আলোচক সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক এ,বি,এম, আতিকুর রহমান বাশার।

অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো হুমায়ুন কবির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সুলতান আহমেদ, ন্যাপ উপজেলা সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক মমিনুর রহমান বুলবুল, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সাইফুল ইসলাম মিঠু মূন্সী, সরকার মোখলেসুর রহমান, সাবেক ইউপি মেম্বার সাদেকুর রহমান, মাওলানা রবিউল আউয়াল প্রমূখ।
অনুষ্ঠান চলাকালে অডিও কলে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী, এমপি, সচিব ও জাতীয় সংসদের প্যানাল স্পিকার এ,বি,এম গোলাম মোস্তফা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো. সোহাগ জমাদার।

বিশেষ অতিথি বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা মুস্তাকুর রহমান ফুল মিয়া মাষ্টার বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া দলগুলোর অন্যতম দল আ’লীগ ক্ষমতায় থাকলেও মুক্তিযুদ্ধ বান্ধব (ন্যাপ (মোঃ), কমিউনিস্ট পার্টি, ভাসানী ন্যাপ) দলগুলো পাশে নেই।

ন্যাপ দেবীদ্বার উপজেলা সভাপতি অনিল চক্রবর্তী বলেন,- আ’লীগ বরাবরই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য দলগুলোকে অবজ্ঞা করে প্রকৃত অর্থে লুটেরাদের পৃষ্টপোষকতা করে এবং গনতন্ত্রকে টুটি চেপে ধরে রেখেছে।

এ স্থানটিকে স্মরনীয় করে রাখতে দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ২০১০ সালের ১২ মার্চ ওই স্থানে ‘৭১’র চিঠি পাঠ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মিলনী’র আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও কলামিষ্ট মোনায়েম সরকার’র সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক, লেখক, কলামিষ্ট, রাজনীতিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক এ,বি,এম আতিকুর রহমান বাশার’র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) নির্বাচনী এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য, সরকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী, সচিব ও জাতীয় সংসদের প্যানাল স্পিকার এবিএম গোলাম মোস্তফা, চিঠিপাঠ অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক, বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাক্ষনপাড়া) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য ও সাবেক আইন মন্ত্রী এডভোকেট মতিন খসরু, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামন্ডুলীর সদস্য এএফএম ফখরুল ইসলাম মূন্সী, দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ’র সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশীদ ভ‚ইয়া সহ দেশবরেণ্য ব্যাক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানের পর সরকার ও প্রশাসনের নজরে আসায় জেলা পরিষদের তত্বাবধানে নলআরায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হয়।

স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে দেশমাতৃকাকে মুক্ত করতে ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী প্রশিক্ষন ক্যাম্প গড়ে উঠেছিল। দেবীদ্বার উপজেলায় ওই সময় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গঠিত প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা মন্ডুলীর সদস্য ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের নিজ গ্রাম এলাহাবাদ, ফতেহাবাদ গ্রামের নলআরায় এবং শুভপুর গ্রামে আরো একটি সেটেলাইট মুক্তিযুদ্ধ প্রশিক্ষণ ক্যাম্প সহ তিনটি অস্থায়ী প্রশিক্ষন ক্যাম্প গড়ে উঠেছিল। তারই একটি ‘নলআরা’, এ স্থানটি স্মরণীয় করে রাখতে জেলা পরিষদের অর্থায়নে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

বর্তমানে ওই স্থানে নতুন করে জেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি স্মৃতিফলক নির্মান করার উদ্যোগ নিয়েছে। উক্ত স্মৃতিফলক নির্মান স্থানের জমি দান করেন স্থানীয় বাসেদ জমাদার ও আব্দুল আলীম।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page