০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লায় কৃতী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও সংবর্ধনা প্রদান জীবনের বাকি সময়টা কুমিল্লা-৬ আসনের নেতাকর্মীদের সঙ্গেই থাকতে চাই -হাজী ইয়াছিন বুড়িচংয়ে যৌতুকের দাবিতে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ; আটক ২ কুবির দত্ত হলে প্রথমবারের মতো আন্তঃহল বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন সংবাদ প্রকাশে নির্ভীক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির এক যুগ শিশুদের নিয়ে কুবি রোটারেক্ট ক্লাবের ‘পুষ্পায়ন’ কর্মসূচি কুমিল্লায় বই মেলায় অষ্টম দিনে কবিতা, আবৃত্তি ও সংগীতে প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক আয়োজন কুমিল্লায় মক্কা হসপিটালের শুভ উদ্বোধন খালেদা জিয়ার জন্য কালিরবাজারে দোয়া ও পথ সভা; ধানের শীষ নিয়েই নির্বাচন করব- হাজী ইয়াছিন ১৭ তম কুমিল্লা মিডিয়া টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জার্নালিষ্ট গ্লাডিয়েটরসের জয়

ছয় মাস হইলো মাছ খাই না ! দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে অসহায় এক দুলাল মিয়া

  • তারিখ : ১২:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩
  • 57

মাহফুজ নান্টু,।।
রিকশার মিস্ত্রি দুলাল মিয়া। রিকশার জন্য বসে থাকেন দুলাল মিয়া। তবে কোথাও যাওয়ার জন্য নয়। সড়কে চলতে চলতে বিকল হয়ে যাওয়া রিকশার ত্রুটি সারিয়ে দেন। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম দিন যাপন করেন। কুমিল্লা মোগলটুলি এলাকার টেলিগ্রাফ অফিসের সামনে কৃষ্ণচুড়া গাছের নিচে তার কর্মস্থল। সেখানেই যন্ত্রপাতি নিয়ে বসে থাকেন। সারদিনে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা আয় করেন। তা দিয়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোন রকম খেয়ে পরে বেঁচে আছেন।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে ভালো নেই দুলাল মিয়া। গেলো ছয়মাস ধরে মাছের স্বাদ পাননি। সারাদিন যা আয় করেন তা দিয়ে চাল আর ডাল কিনে বাসায় যান তিনি। তার স্ত্রী অন্যর জমি থেকে হেলেঞ্চা কুড়িয়ে এনে রান্না করেন। একটু ভালো আয় হলে ডাল আর আলু ভর্তায় দিন পার করেন। এভাবেই চলছে দুলাল মিয়ার সংসার। তবুও জীবন নিয়ে নেই কোন অভিযোগ।

দুলাল মিয়া জানান, কুমিল্লা হাইস্কুলের পেছনে বাড়ি ছিলো। পারিবারিক টানপোড়নে সেই বাড়ি এখন নেই। স্ত্রী ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে আছে। বড় ছেলে আলাদা থাকে। দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট ছেলে আর ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে চাঁনপুর এলাকায় একটি এক কক্ষের বাসা ভাড়া করে থাকেন। বাবা ছেলে মাটিতে বিছানা করে ঘুমান। খাটে থাকে স্ত্রী ও দুই মেয়ে থাকে। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে রিকশা চালিয়েছেন। পরে রিকশা মিস্ত্রির কাজ শিখেন। তারপর থেকে পেশা হিসেবে রিকশার ত্রটি সারিয়ে আয় করা শুরু করেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে দুলাল মিয়ার সাথে কথা হয়। সেদিন তার আয় হয় ১৮০ টাকা। মোগলটুলি থেকে মিনিট পাঁচেকের পথ রাজগঞ্জ বাজার। সেই বাজারে ঘুরে দেখা যায় পাঙ্গাস মাছ ১৮০-২০০ টাকা কেজী। অন্যান্য মাছের দাম কেজী প্রতি আরো বেশী। দুলাল মিয়ার একদিনের আয়ে এক কেজী পাঙ্গাস মাছও কিনতে পারেন না।

যদি এক কেজী মাছ কিনেন তাহলে চাল কিনতে পারবেন না। যদি চাল কিনেন তাহলে মাছ কেনা সম্ভব হবে না। তাই ১৮০ টাকায় এক কেজী চাল, এক কেজী আলু কিনেন।

আক্ষেপের সুরে দুলাল মিযা বলেন, আয় রোজগার বাড়ে নাই। তবে দাম বাড়ছে তরকারীর। এমনে চলতে থাকলে কেমনে কিতা কইরাম। আপনেরা লেখালেখি কইরা দেহেন না দামডা কমাইতে পারেন নি। আর পারতেছিনাও। আমার মত আরো বহুত মানুষ আছে মাছ মাংশ খায় না বহুত দিন। কয়ডা ভাত আর একটু তরকারি অইলেই চলে। আফসোস সুরে কথাগুলো বলতে বলতে বাড়ির পথে পা বাড়ান দুলাল মিয়া…..

error: Content is protected !!

ছয় মাস হইলো মাছ খাই না ! দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে অসহায় এক দুলাল মিয়া

তারিখ : ১২:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩

মাহফুজ নান্টু,।।
রিকশার মিস্ত্রি দুলাল মিয়া। রিকশার জন্য বসে থাকেন দুলাল মিয়া। তবে কোথাও যাওয়ার জন্য নয়। সড়কে চলতে চলতে বিকল হয়ে যাওয়া রিকশার ত্রুটি সারিয়ে দেন। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম দিন যাপন করেন। কুমিল্লা মোগলটুলি এলাকার টেলিগ্রাফ অফিসের সামনে কৃষ্ণচুড়া গাছের নিচে তার কর্মস্থল। সেখানেই যন্ত্রপাতি নিয়ে বসে থাকেন। সারদিনে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা আয় করেন। তা দিয়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোন রকম খেয়ে পরে বেঁচে আছেন।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে ভালো নেই দুলাল মিয়া। গেলো ছয়মাস ধরে মাছের স্বাদ পাননি। সারাদিন যা আয় করেন তা দিয়ে চাল আর ডাল কিনে বাসায় যান তিনি। তার স্ত্রী অন্যর জমি থেকে হেলেঞ্চা কুড়িয়ে এনে রান্না করেন। একটু ভালো আয় হলে ডাল আর আলু ভর্তায় দিন পার করেন। এভাবেই চলছে দুলাল মিয়ার সংসার। তবুও জীবন নিয়ে নেই কোন অভিযোগ।

দুলাল মিয়া জানান, কুমিল্লা হাইস্কুলের পেছনে বাড়ি ছিলো। পারিবারিক টানপোড়নে সেই বাড়ি এখন নেই। স্ত্রী ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে আছে। বড় ছেলে আলাদা থাকে। দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট ছেলে আর ছোট দুই মেয়েকে নিয়ে চাঁনপুর এলাকায় একটি এক কক্ষের বাসা ভাড়া করে থাকেন। বাবা ছেলে মাটিতে বিছানা করে ঘুমান। খাটে থাকে স্ত্রী ও দুই মেয়ে থাকে। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে রিকশা চালিয়েছেন। পরে রিকশা মিস্ত্রির কাজ শিখেন। তারপর থেকে পেশা হিসেবে রিকশার ত্রটি সারিয়ে আয় করা শুরু করেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে দুলাল মিয়ার সাথে কথা হয়। সেদিন তার আয় হয় ১৮০ টাকা। মোগলটুলি থেকে মিনিট পাঁচেকের পথ রাজগঞ্জ বাজার। সেই বাজারে ঘুরে দেখা যায় পাঙ্গাস মাছ ১৮০-২০০ টাকা কেজী। অন্যান্য মাছের দাম কেজী প্রতি আরো বেশী। দুলাল মিয়ার একদিনের আয়ে এক কেজী পাঙ্গাস মাছও কিনতে পারেন না।

যদি এক কেজী মাছ কিনেন তাহলে চাল কিনতে পারবেন না। যদি চাল কিনেন তাহলে মাছ কেনা সম্ভব হবে না। তাই ১৮০ টাকায় এক কেজী চাল, এক কেজী আলু কিনেন।

আক্ষেপের সুরে দুলাল মিযা বলেন, আয় রোজগার বাড়ে নাই। তবে দাম বাড়ছে তরকারীর। এমনে চলতে থাকলে কেমনে কিতা কইরাম। আপনেরা লেখালেখি কইরা দেহেন না দামডা কমাইতে পারেন নি। আর পারতেছিনাও। আমার মত আরো বহুত মানুষ আছে মাছ মাংশ খায় না বহুত দিন। কয়ডা ভাত আর একটু তরকারি অইলেই চলে। আফসোস সুরে কথাগুলো বলতে বলতে বাড়ির পথে পা বাড়ান দুলাল মিয়া…..