১০:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুমিল্লার মা–মেয়ে হত্যাকাণ্ড; প্রশ্নের ভিতরে কিছু প্রশ্ন! কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হালচাষের ট্রাক্টর উল্টে কিশোর নিহত কুমিল্লায় ধর্ষণের বাধা দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ও মাকে খুন; মূলহোতা মোবারক গ্রেফতার পাশাপাশি দাফন করা হলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেয়ে ও তার মাকে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ফকির বাজার আনন্দ আইডিয়া ইসলামিক স্কুলে মিলাদ ও পুরস্কার বিতরণ কুমিল্লার দেবিদ্বারে মাদক কেলেঙ্কারিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বহিষ্কার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তার মা হত্যায় ক্লাস স্থগিত ঘোষণা কুমিল্লায় মা-মেয়ে খুন, সিসিটিভি ফুটেজে রহস্যজনক ব্যক্তির প্রবেশ-প্রস্থান ব্রাহ্মণপাড়ায় বিশুদ্ধ পানির নামে অস্বাস্থ্যকর পানি বিক্রি, ব্যবসায়ীকে জরিমানা

আই ওয়ান্ট জাস্টিস, ব্যাক মাই সিনিয়ওরিটি; প্ল্যাকার্ড হাতে কুবি শিক্ষক

  • তারিখ : ০৩:৪৫:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪
  • 13

কুবি প্রতিনিধি।।
“আই ওয়ান্ট জাস্টিস, ব্যাক মাই সিনিওরিটি” লিখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে একক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোসা. শাহিনুর বেগম।

বুধবার (৫ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে তিনি এ অবস্থান নেন। এসময় তাঁর সাথে একাত্মতা পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকরা।

অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাকে অন্যায়ভাবে প্রমোশন দেওয়া হয়নি। আমার বিভাগের দুই জুনিয়র শিক্ষককে প্রমোশন দিয়ে সিনিয়র করা হয়েছে। আমাকে জুনিয়র করে দেওয়া হয়েছে। তারপর আমি আবেদন করেছিলাম আমার বিষয়ে সিদ্ধান্তটা পুনঃবিবেচনা করে আমাকে ডিউ ডেট থেকে সিনিয়রটি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু আজকে ৪ থেকে ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও আমি কোনো ফলাফল পাইনি৷ এ কারণে আমি অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছি। আমার সাথে অন্যায় হয়েছে। এখন আমার ন্যায্য পাওনাটা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, আমি যে পিএইচডি শেষ করেছি। এখন আমার যে মনোবল, আমার গবেষণা থেকে যে উন্নত শিক্ষাটা পেয়েছি তা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই৷ আমার যে মনোবল তা ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের। আশাকরি কর্তৃপক্ষ আমার এই ন্যায্য বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এটি ফিরিয়ে দিবে।

এদিকে একাত্মতা পোষণ করার বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আইনুল হক বলেন, তার সকল যোগ্যতা থাকার সত্ত্বেও তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। উপরন্তু ঐ বিভাগের জুনিয়র দুজন শিক্ষক যাদের একয় বোর্ডে পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়র করা হয়েছে। সকল শিক্ষকই জানে তার প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে। তার প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদে আমরা সহাবস্থান নিয়েছি।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মাহমুদুল হাছান বলেন, আমরা শিক্ষক সমিতি শাহীনুর ম্যামের সাথে একমত পোষণ করছি। ওনার সাথে যে অন্যায়টা ঘটেছে তা আগত দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে নজির হয়ে থাকবে, কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। একই সাথে জয়েন করা ব্যক্তি প্রমোশন পেয়ে গেছে কিন্তু ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে তাকে আটকে দিয়েছে। এঘটনায় শিক্ষক সমিতি প্রথম থেকেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা চাই ওনার সিনিয়রটি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যেদিন থেকে ওনার প্রমোশন ডিউ হয়েছে সেদিন থেকে প্রমোশন দেওয়া হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পদোন্নতির নীতিমালা অনুযায়ী তিনি ২০২৩ সালের নভেম্বরে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন, সহকারী অধ্যাপক পদে আট বছরসহ শিক্ষকতায় মোট ১১ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা এবং কিউ১ জার্নালে প্রকাশনা থাকা সত্ত্বেও চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ তম সিন্ডিকেট সভায় তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু তার দুইজন জুনিয়র (কনিষ্ঠ) সহকর্মীকে একই সিন্ডিকেট সভায় পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। কনিষ্ঠ শিক্ষকরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী (রানা) এবং শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান। তারা উভয়ই ক্যাম্পাসে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তবে সম্প্রতি উপাচার্যের অনিয়ম উল্লেখ্য করে হল প্রভোস্টের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন মো. সাহেদুর রহমান।

এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদনপত্র জমা দেন মোসা. শাহিনুর বেগম। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, বিধি অনুসারে প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে তাকে বঞ্চিত করার বিষয়টি নিয়মের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় তার ন্যায়সংগত অধিকার খর্ব হয়েছে। যা তাকে মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত করেছে। এর ফলে তার সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। সময় মতো পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ায় তিনি আর্থিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হয়েছেন।

error: Content is protected !!

আই ওয়ান্ট জাস্টিস, ব্যাক মাই সিনিয়ওরিটি; প্ল্যাকার্ড হাতে কুবি শিক্ষক

তারিখ : ০৩:৪৫:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুন ২০২৪

কুবি প্রতিনিধি।।
“আই ওয়ান্ট জাস্টিস, ব্যাক মাই সিনিওরিটি” লিখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে একক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোসা. শাহিনুর বেগম।

বুধবার (৫ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে তিনি এ অবস্থান নেন। এসময় তাঁর সাথে একাত্মতা পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকরা।

অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাকে অন্যায়ভাবে প্রমোশন দেওয়া হয়নি। আমার বিভাগের দুই জুনিয়র শিক্ষককে প্রমোশন দিয়ে সিনিয়র করা হয়েছে। আমাকে জুনিয়র করে দেওয়া হয়েছে। তারপর আমি আবেদন করেছিলাম আমার বিষয়ে সিদ্ধান্তটা পুনঃবিবেচনা করে আমাকে ডিউ ডেট থেকে সিনিয়রটি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু আজকে ৪ থেকে ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও আমি কোনো ফলাফল পাইনি৷ এ কারণে আমি অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছি। আমার সাথে অন্যায় হয়েছে। এখন আমার ন্যায্য পাওনাটা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, আমি যে পিএইচডি শেষ করেছি। এখন আমার যে মনোবল, আমার গবেষণা থেকে যে উন্নত শিক্ষাটা পেয়েছি তা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই৷ আমার যে মনোবল তা ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের। আশাকরি কর্তৃপক্ষ আমার এই ন্যায্য বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এটি ফিরিয়ে দিবে।

এদিকে একাত্মতা পোষণ করার বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আইনুল হক বলেন, তার সকল যোগ্যতা থাকার সত্ত্বেও তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। উপরন্তু ঐ বিভাগের জুনিয়র দুজন শিক্ষক যাদের একয় বোর্ডে পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়র করা হয়েছে। সকল শিক্ষকই জানে তার প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে। তার প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদে আমরা সহাবস্থান নিয়েছি।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মাহমুদুল হাছান বলেন, আমরা শিক্ষক সমিতি শাহীনুর ম্যামের সাথে একমত পোষণ করছি। ওনার সাথে যে অন্যায়টা ঘটেছে তা আগত দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে নজির হয়ে থাকবে, কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। একই সাথে জয়েন করা ব্যক্তি প্রমোশন পেয়ে গেছে কিন্তু ঠুনকো অজুহাত দেখিয়ে তাকে আটকে দিয়েছে। এঘটনায় শিক্ষক সমিতি প্রথম থেকেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা চাই ওনার সিনিয়রটি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যেদিন থেকে ওনার প্রমোশন ডিউ হয়েছে সেদিন থেকে প্রমোশন দেওয়া হোক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পদোন্নতির নীতিমালা অনুযায়ী তিনি ২০২৩ সালের নভেম্বরে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন, সহকারী অধ্যাপক পদে আট বছরসহ শিক্ষকতায় মোট ১১ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা এবং কিউ১ জার্নালে প্রকাশনা থাকা সত্ত্বেও চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ তম সিন্ডিকেট সভায় তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু তার দুইজন জুনিয়র (কনিষ্ঠ) সহকর্মীকে একই সিন্ডিকেট সভায় পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। কনিষ্ঠ শিক্ষকরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী (রানা) এবং শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান। তারা উভয়ই ক্যাম্পাসে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তবে সম্প্রতি উপাচার্যের অনিয়ম উল্লেখ্য করে হল প্রভোস্টের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন মো. সাহেদুর রহমান।

এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদনপত্র জমা দেন মোসা. শাহিনুর বেগম। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, বিধি অনুসারে প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে তাকে বঞ্চিত করার বিষয়টি নিয়মের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় তার ন্যায়সংগত অধিকার খর্ব হয়েছে। যা তাকে মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত করেছে। এর ফলে তার সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। সময় মতো পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ায় তিনি আর্থিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হয়েছেন।