বুড়িচং প্রতিনিধি।।
প্রাইভেটকার ভর্তি ৫০ কেজি ৫ শত গ্রাম গাঁজাসহ এক মাদককারবারীকে আটক করে র্যাব। ঘটনাটি বুড়িচং থানা এলাকায় হওয়ায় র্যাব বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় মামলা দায়ের পূর্বক জব্দকৃত প্রাইভেটকারটি মামলার আলামত হিসেবে বুড়িচং থানা পুলিশের নিকট হস্থান্তর করেন। আর এই প্রাইভেটকার দিয়ে দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত)। এমনকি অন্য জেলায় নিজের বাড়ীতেও যাচ্ছেন তিনি। বুড়িচং থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মাকসুদ আলম এর এমন কাজের সমালোচনা করেছেন সচেতন মহল।
গত ২৫ মার্চ র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা’র কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন স্বাক্ষরিত “স্মারক নং-র্যাব-১১/৯৫০৬/অপস” সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় শুক্রবার (২৫ মার্চ) ভোর রাতে র্যাবের একটি দল জেলার বুড়িচং থানার মোকাম ইউনিয়নের নিমসার বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো- গ ১৫-০০১৯) এর ভিতর লুকিয়ে মাদক পরিবহনের সময় ৫০ কেজি ৫শত গ্রাম গাঁজাসহ মোঃ ইকবাল হোসেন (৩৫) নামে এক মাদক কারবারীকে আটক করা হয়। আটককৃত ইকবাল নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্দীরগঞ্জ থানার পাইনাদি পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে।
আটককৃতের বিরুদ্ধে বুড়িচং থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক জব্দকৃত প্রাইভেটকারটি থানা পুলিশের নিকট হস্থান্তর করা হয়।
কিছুদিন প্রাইভেটকারটি থানা প্রাঙ্গনে পড়ে থাকে। কয়েক দিন পর বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মাকসুদ আলম গাড়ীটি ব্যবহার করতে আরাম্ব করেন। তিনি বুড়িচং থানার বিভিন্ন এলাকাসহ কুমিল্লা ও কুমিল্লা বাহিরেও গাড়ীটি নিয়ে ঘুরে বেড়ান।
একটি সূত্র জানায় সর্বশেষ সোমবার বিকেলে তিনি গাড়ীটি নিয়ে নিজের বাড়ী লক্ষীপুরে চলে যায়। সোমবার রাতেও তিনি লক্ষীপুরে অবস্থান করেন।
মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা গাড়ী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন কিনা, এমন প্রশ্ন করা হলে মাকসুদ আলম বলেন, আমি ছুটিতে গ্রামের বাড়ীতে আছি, এখন ব্যস্থ বলে ফোন কেটে দেয়। পড়ে আর ফোন ধরেন নি।
এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা জজকোর্টের আইনজীবী এড. মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশ ছাড়া কিছুতেই পুলিশ বা অন্য কেউ জব্দ করা গাড়ি ব্যবহার করতে পারে না। যদি করে তবে তা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত। এমনকি ওই সব গাড়ি কোথাও নেওয়ারও নিয়ম নেই। মামলার পরিসমাপ্তি ঘটলেই আদালতের নির্দেশে নিলামে তুলে যেকোনো যানবাহন বিক্রি করতে পারে পুলিশ।
এই মামলাটি যিনি তদন্ত করেন বুড়িচং থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ শরীফ বলেন, পিআর মূলে গাড়ীটি মালখানায় জব্দ আছে, এই গাড়ী যদি কেউ ব্যবহার করে তবে যিনি মালখানার দায়িত্বে আছেন তিনি জবাবদিহি করবেন।
এদিকে থানা সূত্র জানায়, বুড়িচং থানা থেকে জেলার দাউদকান্দি থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) পদে বদলী হন মাকসুদ আলম। তবে তিনি এখনো দাউদকান্দি থানায় যোগদান করেন নি।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মারুফ রহমান বলেন, মামলার আলামতের গাড়ী ব্যবহারের কোন অনুমতি নেই। আমি ৪ দিন হলো বুড়িচং থানায় যোগদান করেছি, বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার বলেন, জব্দকৃত মামলার আলামতের গাড়ী আদালতের নির্দেশ ছাড়া ব্যবহারের অনুমতি নেই। তিনি আদালতের অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে হবে।
র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা’র কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, জব্দকৃত সরঞ্জামাদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেয়া হয়। গাড়ীসহ মাদক উদ্ধারের পরপরই থানায় মামলা দিয়ে আলামত হস্তান্তর করা হয়েছিলো। পরবর্তী কার্যক্রম আদালতে পরিচালিত হয়। জব্দকৃত গাড়ী ব্যবহার করার বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নিবে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page