স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গোমতী নদীর ওপর নির্মিত অস্থায়ী কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়েছে। ফলে নদীর দুই পারের অন্তত ৪৩ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টানা বৃষ্টির ফলে নদীতে সৃষ্ট প্রবল স্রোতে সেতুটি ভেঙে পড়ে। কাঠের এ সেতুটি নির্মিত হয়েছিল নির্মাণাধীন পাকা সেতুর পাশেই, বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে। এক বছর আগে আসমানিয়া বাজার ও নারান্দিয়া গ্রামের সংযোগে এই অস্থায়ী কাঠের সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
ভাঙা সেতুটির উপর নির্ভরশীল ছিল গোমতীর উত্তর–পশ্চিম পারের নারায়ণপুর, হরিপুর, রতনপুর, কদমতলী, ভাটিবন, সোনাকান্দা, জগৎপুরসহ ২৯টি গ্রামের বাসিন্দারা এবং দক্ষিণ–পূর্ব পারের আসমানিয়া, খোশকান্দি, গাজীপুর, নয়াচর, কালিপুরসহ আরও ১৪টি গ্রামের মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, কিন্তু সময়মতো সংস্কার বা মজবুত করা হয়নি। অবশেষে প্রবল স্রোতে সেটি নদীতে ভেঙে পড়ে। ফলে প্রতিদিন এই পথ দিয়ে যাতায়াতকারী পাঁচ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এবং শত শত কৃষক, রোগী ও কর্মজীবী মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
আসমানিয়া বেগম রোকেয়া মহিলা কলেজের শিক্ষক মো. কিবরিয়া বলেন, “সেতু না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত না হলে পড়াশোনার ক্ষতি হবে।”
আসমানিয়া বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, “সেতু ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বাজারে বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ব্যবসায়িক ক্ষতিও কম নয়।”
অন্যদিকে নদীর ওপার থেকে বাজারমুখী যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্ধশতাধিক সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকের আয় কমে গেছে বলে জানান সাবেক ইউপি সদস্য মোস্তাক হোসেন।
তিতাস উপজেলা প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, “নদীতে এখনো প্রবল স্রোত রয়েছে। ফলে মেরামতের কাজ সম্ভব হচ্ছে না। পানি কমলে সেতুর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
বর্তমানে বিকল্প হিসেবে চার কিলোমিটার পথ ঘুরে দাসকান্দি হয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী। কিন্তু নৌকা বা ট্রলার এখনও চালু হয়নি, ফলে দুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page